Posts

  বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় শ্রীচরণেষু দেবাশিস মুখোপাধ্যায়   বাংলা সাহিত্য তথা ভারতীয়-সাহিত্যাচার্য ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তোমাকে প্রণাম জানাবার প্রবল ইচ্ছা কিন্তু প্রণামের মন্ত্র আমার জানা নেই। আসলে কি জানো, ঋষি, সাহিত্যাচার্য কি সাহিত্য-সম্রাট—যে মন্ত্রই উচ্চারণ করি না কেন, মনে হয় বুঝি ঠিক হ’ল না, তোমাকে বিশেষিত করতে কোথাও যেন অপূর্ণতা রয়ে যায় অনেকখানি। তাই তোমার দেওয়া   ‘বন্দেমাতরম’ মন্ত্রেই তোমাকে প্রণাম জানাই, শ্রদ্ধা ও বিনম্রচিত্তের ভক্তি নিবেদন করি।      বড় বিস্ময়ের বিষয় কি জানো বঙ্কিম, তোমাকে চোখে দেখিনি কোনোদিন, তোমার জন্মের সার্দ্ধশত বৎসরে—কলেজ জীবনে তোমার উপন্যাস পাঠের মধ্য দিয়ে তোমার সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তোমার এক কাছের ভক্ত, যিনি তোমার জীবনী লিখেছেন সেই অমিত্রসূদন ভট্টাচার্য মহাশয়ের কাছ থেকেই তোমাকে দেখার মতো দৃষ্টি পেয়েছিলাম প্রথম। বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার গবেষণার প্রথম বিষয়ও ছিল তোমারই সাহিত্য। কিন্তু তা শেষ করতে পারিনি জানো—কয়েকটি প্রবন্ধ প্রকাশেই সাঙ্গ করতে হয়েছিল । তারপর দীর্ঘ পঁচিশ বছর তারাশঙ্করের প্রেমে পড়ে তোমার সঙ্গে দূরত্ব

মার্ক্সবাদী দৃষ্টিতে রামায়ণ পর্যালোচনা : প্রতিবাদে তারাশঙ্কর

মার্ক্সবাদী দৃষ্টিতে রামায়ণ পর্যালোচনা : প্রতিবাদে তারাশঙ্কর দেবাশিস্ মুখোপাধ্যায় রামায়ণ মহাকাব্যের রাম, রাবণ এবং সীতা এই তিন চরিত্রই আমাদের কাছে সর্বাধিক আলোচিত এবং সমালোচিত হয়ে থাকে। তার মধ্যে সীতা কিম্বদন্তীমূলক পঞ্চসতীর এক উজ্জ্বল উদাহরণ। আর বহুগুণের অধিকারী হয়েও রাবণ আমাদের কাছে এক আতঙ্কের আধার হিসেবেই পরিচিত। লঙ্কেশ্বর রাবণ যেন ভারতীয় সংস্কৃতির এক বিখ্যাত খল নায়ক। বহু বিবাহিত পুরুষ হয়েও নারী হরণ ও ধর্ষণ যেন তাঁর নিত্য কর্ম হিসেবেই সর্বজন-বিদিত। সেই জন্যই বোধ হয় সীতাকে চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময়ে রাবণের কথায় মধুকবির কথা—‘কার ঘর আঁধারিলি এবে নিবাইয়া প্রেমদীপ / এই তোর নিত্য কর্ম জানি’। রামায়ণের রাবণ এবং সীতা সম্পর্কে এমন ধারণা মানুষের কল্পনা প্রসূত নয়; মহাকবি বাল্মিকীর চরিত্র-চিত্রণের সূত্র ধরেই আমাদের এমন ধারণা সম্ভব হয়ে উঠেছে। সেই সূত্র থেকেই যুগ যুগ ধরে প্রচলিত হয়ে রয়েছে—ধরিত্রী কন্যা সীতা—সর্বংসহা, সীতা অপহৃতা হয়েও সতী। মহাকবি বাল্মিকী ভারতীয় নারী ঐতিহ্যের আদর্শকেই সীতা চরিত্রে মহিমান্বিত করেছেন। এমন প্রবাদ প্রতীম প্রামাণিক সত্যকে বিকৃত ব্যাখ্যায় কলঙ্কিত করতে চেয়েছিলেন